চিংড়ি মাছ খাওয়া কি হারাম
🦐 চিংড়ি মাছ খাওয়া কি হারাম নাকি হালাল?
ইসলামে চিংড়ি মাছ খাওয়া নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক মতভেদ দেখা যায়। কেউ একে হালাল বলে থাকেন, আবার কেউ বলেন এটি খাওয়া উচিত নয়। তাই চলুন দেখে নেওয়া যাক ইসলামি দৃষ্টিতে চিংড়ি মাছের আসল অবস্থান কী।
⚖️ ইসলামি ফকিহদের ভিন্ন মত
ইসলামী শরীয়তের ব্যাখ্যাকারী আলেমরা সাধারণত চারটি মাজহাব অনুসরণ করেন — হানাফি, শাফেঈ, মালেকি ও হাম্বলি। চিংড়ি মাছ সম্পর্কে তাদের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন।
🕌 হানাফি মাজহাব
হানাফি ফকিহদের মতে, চিংড়ি মাছ প্রকৃত “মাছ” নয়, বরং সমুদ্রের এক ধরনের প্রাণী। তাই একে খাওয়াকে তারা মাকরূহ (অপছন্দনীয়) বলেছেন। অর্থাৎ, খেলে গুনাহ নেই, তবে না খাওয়াই উত্তম। তবে তারা এটিকে হারাম বলেননি।
🕋 শাফেঈ, মালেকি ও হাম্বলি মাজহাব
এই তিন মাজহাবের আলেমরা একমত যে, চিংড়ি মাছ পুরোপুরি হালাল। তাদের যুক্তি হলো—চিংড়ি সমুদ্রের প্রাণী, আর কুরআনে আল্লাহ তাআলা সমুদ্রের সমস্ত শিকার ও খাদ্যকে হালাল ঘোষণা করেছেন।
“তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সমুদ্রের শিকার এবং তা খাদ্যরূপে গ্রহণ করা।”
— (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৯৬)
🇧🇩 বাংলাদেশের প্রচলিত মতামত
বাংলাদেশে শাফেঈ ও আহলে হাদীস মতাদর্শ অনুসারীরা সাধারণত চিংড়িকে হালাল বলে থাকেন।
অন্যদিকে, হানাফি মাজহাবের অনুসারীরা অনেকেই সতর্কতার জন্য একে না খাওয়াই ভালো মনে করেন।
✅ চূড়ান্ত রায়
| মাজহাব | রায় |
|---|---|
| হানাফি | মাকরূহ (অপছন্দনীয়, হারাম নয়) |
| শাফেঈ, মালেকি, হাম্বলি | হালাল |
🧭 উপসংহার
চিংড়ি মাছ নিয়ে মতভেদ থাকলেও এটি কোনো পক্ষের কাছেই স্পষ্টভাবে হারাম নয়। তাই যার মাজহাব বা আলেমের অনুসরণে আস্থা আছে, তিনি তার নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে পারেন। আর সন্দেহ থাকলে পরিহার করাই উত্তম, কারণ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে, সে নিজের দ্বীন ও ইজ্জতকে রক্ষা করে।”
— (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)