বাচ্চা হলে আযান দেওয়ার নিয়ম | নবজাতকের কানে আযান ও ইকামতের সুন্নাত

 

🕋 বাচ্চা হলে আযান দেওয়ার নিয়ম ও ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি

🌙 ভূমিকা

নবজাতক সন্তান জন্ম নেওয়া মুসলমান পরিবারের জন্য এক আনন্দঘন মুহূর্ত। ইসলাম এ সময় কিছু সুন্দর ও তাৎপর্যপূর্ণ আমল শিক্ষা দিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো নবজাতকের কানে আযান ও ইকামত দেওয়া। এটি শিশুর জীবনের শুরুতেই তাওহিদ ও ইসলামের আহ্বান পৌঁছে দেওয়ার একটি প্রতীকী রূপ।


📖 আযান দেওয়ার মূল হাদীস

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন—

“যখন তোমাদের কারো সন্তান জন্ম নেয়, তখন তার ডান কানে আযান ও বাম কানে ইকামত দাও।”
(আবু দাউদ, হাদীস: ৫১০৫)

এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, নবজাতকের কানে আযান দেওয়া সুন্নাত এবং অত্যন্ত বরকতময় আমল।


🕋 আযান দেওয়ার নিয়ম

১️⃣ কে আযান দেবে

বাবা, দাদা, বা কোনো ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি শিশুর কানে আযান দিতে পারেন। সাধারণত পিতা নিজেই এ কাজ করেন — এটি উত্তম।

২️⃣ কখন আযান দিতে হবে

শিশু জন্ম নেওয়ার পরপরই বা অল্প সময়ের মধ্যে আযান দেওয়া সুন্নাত। তবে যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয়, তাতেও সমস্যা নেই।

৩️⃣ কীভাবে আযান দিতে হবে

  • প্রথমে শিশুটিকে আলতো করে কোলে নিন বা পাশে রাখুন।

  • ডান কানে মুখ রেখে স্বাভাবিক আওয়াজে পুরো আযান দিন।

  • তারপর বাম কানে ইকামত দিন।

📜 আযানের বাক্য:

الله أكبر، الله أكبر
أشهد أن لا إله إلا الله
أشهد أن محمداً رسول الله
حي على الصلاة
حي على الفلاح
الله أكبر، الله أكبر
لا إله إلا الله


⚖️ কেন নবজাতকের কানে আযান দেওয়া হয়

  • তাওহিদের বার্তা শিশুর জীবনের শুরুতেই পৌঁছে দেওয়া হয়।

  • শয়তান থেকে রক্ষা — হাদীসে এসেছে, আযানের শব্দে শয়তান পালিয়ে যায়।

  • এটি নবজাতকের পরিচয়ইসলামি সংস্কৃতির সূচনা।


💡 কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • আযানের সময় শিশুর মুখে কোনো কিছু (যেমন মিষ্টি বা খেজুর) না দেওয়াই ভালো; বরং আলাদা করে তহনিক করা যায় (যা নবী ﷺ করেছেন)।

  • আযান ধীরে ও মৃদু কণ্ঠে দেওয়া উচিত, যাতে শিশুর কোনো কষ্ট না হয়।

  • এটি ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।


🌟 উপসংহার

নবজাতকের কানে আযান দেওয়া একটি সুন্দর সুন্নাত, যা আল্লাহর একত্ব, নবুওয়াত ও ইসলামী চেতনার প্রথম শিক্ষা। তাই সন্তান জন্মের মুহূর্তেই আযানের মাধ্যমে আল্লাহর নাম শিশুর জীবনের সূচনায় উচ্চারিত করা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও বরকতময় কাজ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url